
Filmy Hoichoi
チャンネル登録者数 3870人
226 回視聴 ・ 13いいね ・ 2020/08/30
আমাকে কেউ আর মামলেট বানিয়ে খাওয়ায় না। আগে খাওয়াতো। সন্ধ্যাবেলা কোন মধ্যবিত্ত বাড়ি গেলেই চা আর সাথে মামলেট আসতো।
যেরকম রোববার মানেই গরম লুচি আর সাদা আলুর তরকারি ছিল। স্নান শেষে একপিস মাংস আর আলু বাটিতে নিয়ে নুন-মশলা চেখে দেখা ছিল। হালখাতার মিল্কোস ছিল, স্বাধীনতা দিবসের শিঙারা লাড্ডু ছিল। শীতকালে হাঁক মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়ার।
তখন স্টার জলসা ছিল না, পাবজি ছিল না, ব্লু হোয়েল ছিলনা, হোয়াটসঅ্যাপও গবেষকের মস্তিস্কে। থাকার মধ্যে জন্মভূমি, খাস খবর, আমার জন্য শক্তিমান, সুপার হিরো সামুরাই, বাবা সাইগেল এর ঠান্ডা ঠান্ডা পানি।
আগে হাঁক দিয়ে জুঁই ফুল মালাও তো সন্ধেবেলা যেত। পিছন পিছন ঘটি গরম, বেশ রাত হলে কুলফি। আগে তো লোডশেডিং ও নেমে আসতো৷ এখন কেউ হাঁক সচারচর দেয় না। ইন্ডিসেন্সি বলে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত শুড়িখানায় ফিসফিস করে লোকে কথা বলে। গ্লাসের টুংটাং ইতিউতি।
কোন আলিশান রেস্তোরাঁ কবিরাজি কাটলেট, মোগলাই পরোটা, তেলওয়ালা কাতলা মাছের ফ্রাই বিক্রি করেনা। লম্বা বেগুন ভাজা, শালপাতায় ভাত, ছোলার ডাল আর হিং এর কচুরি ও নেই। থাকার মধ্যে সেজওয়ান সস, চাউমিন আর চিলি চিকেন।
ছাদে হারমোনিয়াম রোদে দিত যে আকর্ষণীয় দিদি, তার বিয়ে হয়ে গেছে। বাচ্চাও হয়েছে বোধহয়। নানা স্কেল চেঞ্জ করে বাচ্চা শাসন করে এখন। অনেক বছর এ পাড়ায় আসেনা। শুনেছি ওরা প্রবাসে। বর বড় কাজ করে বিদেশেই আর ও ঘর সামলায়। মানে প্রবাসে পুঁই শাক বানাতে চেষ্টা করে আরকি নিঃসঙ্গতা কাটাতে।
ছাদে তো আচারের বয়ামও থাকতো। দিদা বানাতো। সেই ঠাকুমাও আর নেই ঠাকুমার ঝুলিও নেই। গল্পগুলো সব ফুরোচ্ছে। নটেগাছটি মুড়োচ্ছে।
ফোনও তো একটাই ছিল গোটা বাড়ির। তিনবার রিং হয়ে কেটে যাওয়া মানে ওর ফোন আসবে। ওর মানে সেই যে বিনুনি, স্কুলের স্কার্ট। স্কুলবাস থেকে ছুঁড়ে দেওয়া কাগজের মন্ড বা ভালোবাসা মানে আর্চিস গ্যালারি। আই লাভ উই। প্রেমের খেলা মা বাবাকে ডজ করে। টিউশন যাওয়ার নাম করে। সাইকেলের চেন পড়ে গেলে পায়ে হেঁটে।
বিকেলে খেলার মাঠও তো ছিল। ক্যাম্বিস বল বা কালো রাবার বল, বুম বুম বুমার। বিগ ফানের হাজারো ক্রিকেটারের ছবি জমানোর হিড়িক। কফিটোসের লাভ কার্ড মনে পরে? ছেলে মেয়ে দুজন ছুলেই কত শতাংশ প্রেম আছে ফুটে উঠতো। কী জানি কোন বিজ্ঞানে ফুটিয়ে তোলা হতো। তখন টিন্ডার ছিল না, ম্যাচমেকার বলতে ওটাই।
ফেলুদা তোপসে আর কোন অভিযানে যায় না, ঋতুপর্ণ ঘোষ আর রোববার পত্রিকার ফার্স্ট পার্সন নয়, পিসি সরকারও আর সিংহ পোষেনা। অঞ্জন, রঞ্জনা, আসমা চৌধুরী জয়িতাও বুড়ো। "মন খারাপের বিকেলে কেউ গলা সাধে না। কার্নিশে আর শালিক পাখি বাসা বাঁধে না. বাঁধে না।"
আমরা উন্নয়নের রাজপথ ধরে কেবল দৌড়চ্ছি। আশা-আকাঙ্ক্ষা আকাশ জুরে, পেল্লায় সব ইচ্ছে-পূরণের ডেডলাইন। শপিং মল আর দারুণ আধুনিক রেস্টোবার রাস্তার দুপাশে। হাঁপিয়ে গেলে এনার্জি ড্রিংক আছে। রান লোলা রান। বৃদ্ধির এস্কালেটার যত্রতত্র সর্বত্র,আমরা দৌড়চ্ছি দিগ্বিদিকশূন্য কোন এক অত্যাধুনিক অন্ধকূপে। হাতে টানা রিক্সা চেপে পিছনের দিকে ফের যাওয়া যেতে পারে? জিয়া নস্টাল মোড়ে নামিয়ে দেবে, দরদাম হবে।
সব গল্প ফুরিয়ে যাচ্ছে, নটে গাছটি মুড়িয়ে যাচ্ছে। কেউ বলার নেই আমাদের, "দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব/ বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল!" আমাদের তো এপিটাফ লেখারও সময় নেই আর। সব শেষে লিখে যাই ক্ষুদ্র করে আর.আই.পি!
লেখা - Mayukh Ranjan Ghosh Page
পাঠে - RJ নীলাঞ্জন
EDITING :
BACKGROUND MUSIC SOURCE - GOOGLE
MUSIC MIXING & VIDEO COMPILATION - SUPRATIM ROY
PICTURE & VIDEO SOURCE - GOOGLE
コメント
使用したサーバー: directk
コメントを取得中...